বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ৮২% আয় গার্মেন্টস সেক্টর থেকে। এই গার্মেন্টস সেক্টরকে বাঁচিয়ে রেখেছেন ৪০লক্ষ শ্রমিক। করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, স্থবির এবং মানুষ আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে; ঠিক সেই মুহূর্তেও গার্মেন্টস মালিকরা তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থে কারখানা খুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যার সবচেয়ে কার্যকরী ও উৎপাদনশীল অংশ গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য করছেন। গত ৪ঠা এপ্রিল সারাদেশ থেকে শ্রমিকরা মহাসড়কে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেই পঙ্গপালের মতো ঢাকায় প্রবেশ করে। যা পুঁজি দস্যুদের জবরদস্তিমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের জীবন বিপন্ন করার নামান্তর। প্রকারান্তরে তাদেরকে গণহত্যার দিকে ধাবিত করা হয়েছে। যা সংবিধান পরিপন্থী এবং ১৪ ও ৩৪ নং অনুচ্ছেদের স্পষ্টত লঙ্ঘন।

আজ ৬ এপ্রিল ২০২০ইং সোমবার ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এম. হাছিবুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল করীম আকরাম এক যৌথ বিবৃতিতে উপরোক্ত কথা বলেন।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ইতোমধ্যে ৫০০০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পুঁজিপতি মালিকপক্ষের অর্থলিপ্সার কোন অন্ত নেই। বিজিএমইএ বা সরকার কেউই নাকি তাদের বাধ্য করতে পারেন না! পারেন কেবল অনুরোধ করতে! ফলশ্রæতিতে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক তাদের জীবন বিপন্ন করে ঢাকার অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। সমালোচনার মুখে তাৎক্ষণিক আবার তা বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ার ফলে শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে ঢাকায় আসা শ্রমিকদের বাসায় উঠতে দিচ্ছেন না বাড়ির মালিকরা। জীবিকার তাগিদে শ্রমিকদের ঢাকায় আসা আবার বাড়ি ফেরা সরকারের সমন্বয়হীনতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, যখন গোটা বিশ্ব নতুন এই ব্যাধিতে (কোভিড-১৯) বিপর্যস্ত; তখন গার্মেন্টস মালিকদের এমন গর্হিত আচরণ রাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান বিরোধী। গার্মেন্টস মালিকদের এমন আচরণ সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৮-এরও সরাসরি লঙ্ঘন। হুকুমের আসামি হিসেবে তদন্ত সাপেক্ষে মানবতাবিরোধী এসব মালিককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নেতৃদ্বয়। সাথে সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখা এসব গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি এড়ানোর স্বার্থে অনির্দষ্টকাল সকল কারখানা বন্ধ এবং শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ তাদের পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করারও দাবি জানান তাঁরা।

বার্তা প্রেরক

কে.এম. শরীয়াতুল্লাহ
কেন্দ্রীয় প্রচার ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন