DSC00379

DSC00375

শিক্ষানীতিতে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানিত্ব ধ্বংসের চক্রান্ত বাতিল না হলে কঠোর আন্দোলন
-গোলটেবিল আলোচনায় পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, জাতীয় শিক্ষানীতিতে হিন্দুত্ব বাদ প্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানিত্ব ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার শিক্ষানীতি বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, বর্তমান সিলেবাসে মুসলমানিত্ব¡ ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এরফলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বও চরম হুমকির মুখে পড়বে।

গতকাল শনিবার বেলা ৩টা থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শিক্ষা আইন পর্যালোচনা শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

নগর সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মওলানা ঈসা শাহেদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, বায়তুল মোকাররম মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতী মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সিদ্দিকুর রহমান নিজামী, অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর খান, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমান, প্রিন্সিপাল মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আলÑফরিদী, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ড. এনামুল হক আজাদ, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ডা. এসএম সাখাওয়াত হোসেন, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কে এম আতিকুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মুফতি দেলাওয়ার হোসেন সাকী, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, এডভোকেট একেএম এরফান খান প্রমুখ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, স্কুল-কলেজ, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণীর সিলেবাস থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহ্য ও চেতনা সমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ইত্যাদি বাদ দিয়ে তদস্থলে নাস্তিক ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ভাবধারা সমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা সংযুক্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র এদেশের মুসলমানরা মেনে নিবে না। সিলেবাসে যে সমস্ত অবাঞ্চিত বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে তা পঁচাব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে অপ্রয়োজনীয়। তিনি বলেন, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাদ দিয়ে ৯৫% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। নাস্তিক্যবাদীদের চক্রান্তে ইসলামী শিক্ষা, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস তাহযীব, তামাদ্দুন বাদ দেয়া বা সংকোচন করা চলবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামী ও মুসলিম ঐতিহ্য বাদ দেয়ার চক্রান্ত দেশ প্রেমিক তাওহীদি জনতা বরদাশত করবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না।
গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, আধুনিক শিক্ষার সাথে ইসলামী শিক্ষা না থাকায় ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবন এক ভয়াবহ চারিত্রিক দূর্যোগ ও নৈতিক অবক্ষয়ের কবলে পড়েছে। দেশে খুন-ধর্ষণ, জুলুম-নির্যাতন, সুদ-ঘুষ, দূর্নীতিসহ সব অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে দেশে ৩২০৩১টি কলেজ-স্কুল মাদকের ঝুঁকিতে রয়েছে।

আলোচনা বক্তারা আরো বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নাস্তিক বানাতে আধুনিক ও প্রগতিশীলতার নামে পরিকল্পিতভাবে পাঠ্যবইয়ে, নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী লেখা সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কৌশলে ইসলামের প্রতি অবজ্ঞা এবং পীর-মাশায়েখদের চরিত্র হননের চেস্টা করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ঈমানদার জনতাকে সোচ্চার হতে হবে। তারা ধর্মীহীন সেক্যুলার শিক্ষানীতি অবিলম্বে বাতিল করার আহ্বান জানান।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও গল্প মোট ১৯৩টির মধ্যে ১৩৭টিই মুসলমানদের কৃষ্টিকালচারের বাইরে, নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদীদের লেখা। আলিয়া মাদরাসায়ও যাদের গদ্য ও কবিতা পাঠ্য তালিকা করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই নাস্তিক ও হিন্দু লেখকদের লেখা। তিনি বলেন, বিদ্যমান এই পাঠ্যসূচি পশু স্বভাবের শিক্ষিত অপদার্থ, দুর্নীতিবাজ, লম্পট এবং রক্ষকের বেশে ভক্ষক ছাড়া আর কিছুই তৈরি করবে না।

বক্তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ও ইসলামী ভাবধারা মুছে ফেলার সাথে জড়িত মহল এবং প্রশ্নপত্রে ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে বিদ্বেষ ছড়ানোর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় দেশপ্রেমিক তাওহীদি জনতা সময় মতো তার জবাব দেবে।