বিতর্কিত পরীক্ষা পদ্ধতি

মুহা. শাহীন হাওলাদার

শি¶া একটি জাতি গঠনের প্রধান উপাদান। একটি শি¶িত জাতিই পাওে পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নিতে এবং পারে একটি নতুন সভ্যতার জন্ম দিতে। সেদিক থেকে পরিসংখ্যান দেখলে সা¤প্রতিক কালে আমাদের এগিয়ে থাকারই কথা, কেননা বিগত প্রায় ১০ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরী¶ার পাসের হার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সহজেই প্রতীয়মান হয় জাতি হিসেবে শি¶িত হচ্ছি, কিন্তু সুশি¶িত কি হতে পারছি? পরী¶া মানে একটি মান। এই মান এর একটি পাশে থাকবে ফেল আর একটি পাশে পাশ। কিন্তু এখন এই মানটিকে এমনভাবে সহজলভ্য করা হয়েছে যে এই পরী¶া হচ্ছে পাশ করানোর পরী¶া যেখানে ফেল নামক কিছুই থাকবে না এ সম্পর্কে একজন প্রফেসার বলেন পরী¶া গ্রহণের ল¶্যই হলো ফেল করানো, তাতে যারা পাশ করে তাদেও মান সঠিকভাবে যাচাই হয়।

পরী¶া পদ্ধতি সহজ করে পাশের হার বাড়ালে অযোগ্য ছাত্র পাশ করবে তাতে পরী¶ার আর কোনো মূল্য থাকবে না। তিনি আরো আরো বলেন আমাদের শি¶া মান এখন নামতে নামতে এতই নিচে নেমেছে যে আর নিচে নামা সম্ভব নয়। এখান থেকে উপরের দিকেই যেতে হবে নিচে আর জায়গা নেই। আরেকটি দুর্ভাগ্যজনক কথা হলো আমাদেও সরকারগুলোর সফলতা ব্যর্থতা আমরা নিরূপণ করি পরী¶া পাশের হার এর মাধ্যমে। যে কারণে সরকার শুধু পাশের হার বাড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় শি¶ার মান না বাড়িয়ে। এটি চরম একটি নির্বুদ্ধিতার পরিচয় আমাদের। প্রশ্ন হলো এই বিশাল অঙ্কের ছাত্র- ছাত্রীরা কোথায় যাবে এরপর? প্রশ্ন জটিল হলেও উত্তর অনেক সহজ আমাদের এই দেশে। একেবারে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে ডিগ্রী দিয়ে দেয়া হচ্ছে অনায়াসেই। গ্রাম থেকে এসে এভাবেই প্রতারিত হচ্ছে অনেক শি¶ার্থী।

আমাদের উচ্চ শি¶া আজকে প্রশ্নের সম্মুখীন। পাবলিক ইউনিভার্সিটি নতুনহয়েছে অনেকগুলো কিন্তু সেগুলোর সংখ্যা এবং মান আরো বাড়াতে হবে। এবং হাতে গোনা দশটি ইউনিভার্সিটি ছাড়া বাকি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর অবস্থা খুবই জঘন্য। কিন্তু ঠিক ঠিক ই দেখা যাচ্ছে চার বছরের মধ্যে ডিগ্রী দিয়ে দিচ্ছে। আর অন্য দিকে আছে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় যার অধীনে কয়েক ল¶্য ছাত্র পড়াশুনা করছে , তার মান উন্নয়ন এর দিকেও কোনো খেয়াল নেই সরকার এর। অনেক বার বলা হলো বিভাগ অনুযায়ী ভাগ করে দেয়া হোক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। তাতে করে এর মান এবং সেবা দুটোই বাড়বে কিন্তু নানা জটিলতায় সেটাও সম্ভব হলো না। এভাবে কী পাব আমরা? হয়ত শি¶ার হার বাড়বে কিন্তু আমরা শি¶িত মানুষ পাব না। দেশ হারাবে তার প্রাণশক্তি। তাই আধুনিক শি¶া নীতি প্রণয়ন আজ সময়ের দাবি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর গবেষণা কাজে মনোনিবেশ খুবই প্রয়োজন। নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া বন্ধ করতে হবে, পুরনো গুলোর মান উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে। “পরিমাণে নয় মানেই জাতির পরিচয় ” আমরা পরিমাণ বাড়ানোর চেয়ে মান বাড়ানোর দিকে জোর দিব সেটাই হোক আমাদের কামনা। আসার কথা কথা হল আমরা আর নিচে নামতে পারিনা এখান থেকে শুধু উপরেই যাওয়া সম্ভব।

লেখক
সভাপতি
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন
ইপিজেড থানা (চট্টগ্রাম মহানগর)
অধ্যয়নরত
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

  • লেখাটি ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর দ্বিমাসিক মুখপাত্র ‘ছাত্র সমাচার’ আগস্ট-সেপ্টেম্বর’১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।