“নিরাপদ সড়ক চাই” আন্দোলন রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকদের চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপার
রাষ্ট্রকেই এর সমাধান করতে হবে
এখানে ছাত্রলীগের মাস্তানী বরদাস্ত করা হবে না

-ইশা ছাত্র আন্দোলন

চলমান ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন নাই। সুস্থ বিবেকের সকলেই এই দাবীর সাথে একমত এবং নাগরিকেরা স্বতঃস্ফূ র্ত ভাবে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রের কর্তব্য ছিলো শিশুদের ও নাগরিকদের এই দাবী মেনে নিয়ে দৃশ্যগ্রাহ্যভাবে তা বাস্তবায়ন করা। মাননীয় মন্ত্রীবর্গ শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে বটে কিন্তু সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের বারংবার ওয়াদা খেলাফী ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে ছলছাতুরী করার কারণে শিক্ষার্থীরা এবং নাগরিকগণ মন্ত্রীদের আশ্বাসে বিশ্বাস করতে পারছেনা।

মন্ত্রীদের আশ্বাসের প্রতি এই গণ-অনাস্থার আরেকটি বড় কারণ হলো, পরিবহন খাতে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের হোতারা আজও মন্ত্রী সভায় রয়েছে, অনেকে স্বসম্মানে মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা তারা যখন বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়ায় তখন সরকারের আশ্বাসে আস্থা তৈরী না হওয়াই স্বাভাবিক। আস্থার এই সংকটময় সময়ে সরকারের কর্তব্য ছিলো, নাগরিক ও শিশুদের মনে আস্থা জন্মায় এমন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। কিন্তু সেটা না করে শক্তি প্রয়োগ করার পন্থা বেছে নিয়েছে সরকার। বিস্ময়ের বিষয় হলো, সরকারী দলকে বিশেষত ছাত্রলীগকে এই শিশু-কিশোরদের ওপরে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। হায়নার মতো এরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপরে লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা করছে, পিটিয়ে রক্তাক্ত করছে। শীর্ষ সংবাদ মাধ্যমের স্বীকৃত হিসাব মতেই কয়েক শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, যাদের অনেকের অবস্থাই গুরুতর।

রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকের চাওয়া-পাওয়ার এই আন্দোলনে ছাত্রলীগ কেন হানাদারের ভুমিকায় অবতীর্ন হয়েছে? রাষ্ট্রই বা কেন এই হানাদারদেরকে সুযোগ করে দিয়েছে? ঝিগাতলার ঘটনায় “গুজব” ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী “গুজব” রটানোর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। সেটা হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু তারও আগে প্রশ্ন হলো, ছাত্রলীগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা করলো কেন? কেন তারা শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করলো? তাদের এই হিংস্র হামলার পরেই তো “গুজব” তৈরী হয়েছে। আমরা তীব্র দাবী জানাচ্ছি যে “গুজব” এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে ঝিগাতলার শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলাকারী সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করুন। সরকারী দলের নেতাদের ভাষ্যমতে হামলা কারীরা তাদের দলের কেউ না। তাই যদি হয় তাহলে তাদের গ্রেফতারে সরকারের বাধা কোথায়?

আজ ০৫/০৮/২০১৮ ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ এবং সেক্রেটারি জেনারেল এক যৌথ বিবৃতিতে উপরোক্ত কথা বলেন।

নেতৃদ্বয় আরো দাবী করেন আমরা অবিলম্বে ঝিগাতলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দালনরত শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলাকারী সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো মেনে তা কার্যকর করার আহ্বান করছি। নাগরিকের মনে আস্থা জন্মাতে যা যা করণীয় তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। এবং অবশ্যই শক্তি প্রয়োগ করার ঘৃণ্য পন্থা থেকে সরকারকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানাচ্ছি।