ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর ২৫ বছর পূর্তিতে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ খলীলুর রহমান-এর অনুভূতি

Neyamat

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানব জাতি ও জ্বীন জাতীকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদাতের জন্য। যখন আল্লাহ‘র সৃষ্টি ফেরেশতাক‚ল আজন্ম আপন মনিবের আরাধনায় লিপ্ত। তাদের কেউ দণ্ডায়মান, কেউ রুকুতে ন্যুয্য আর কেউ সিজদায় অবনত। তথাপিয় আল্লাহ তা‘আলা মানুষ ও জ্বীন সম্প্রদায় কে সৃজন করেছেন তার বন্দেগীর জন্য। আবার পৃথিবীতে বনী আদম প্রেরণের অভিপ্রায়ে মহান রাব্বুল আলামীন বলেছেন- আমি দুনিয়ায় আমার প্রতিনিধি পাঠাতে যাচ্ছি।

গোটা বিষয়টিকে মিলিয়ে আমরা বলতে পারি, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতীকে ইবাদাতের মাধমে ব্যক্তিজীবন গঠন ও খিলাফাতের মাধ্যমে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গঠনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। আর প্রকৃত বাস্তবতা হল, সমাজ ও রাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বাস্তবায়িত না থাকলে ইবাদাত পরিপূর্ণ হক আদায় করা সম্ভব হয়না। হযরত পীর সাহেব চরমোনাই রহ. উক্ত বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেই তাসাওউফ ও সিয়াসতের ময়দানে নিরলস কাজ করে গেছেন। রুহানিয়্যাতের ওপর পূর্ণতা আনয়নে বাংলাদেশের মুজাহিদ কমিটি’র পাশাপাশি খিলাফাত তথা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

Kholil

ইতিহাস সাক্ষ্যি, যুগ-যুগ ধরে তরুণরাই সকল পরিবর্তনের ভিত্তি রচনা করেছে। তরুণদের তাজা খুনেই অর্জিত হয়েছে পৃথিবীর সব ক‘টি বিপ্লব। এ কথা যেমন সত্য; এটাও সত্য যে, বর্তমানের যুবসমাজ নিজেদের গৌরবময় অতীত, ইতিহাস ও ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে চরম অন্ধকারের পথে পা বাড়িয়েছে। তাই তরুণ-ছাত্র সমাজের আত্মিক উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের মাধ্যমে ঘুনেধরা এ সমাজ ও রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন সাধনের যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ থেকেই পরিবর্তনের প্রতিশ্রæতি নিয়ে ১৯৯১-এ গঠিত হয় ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখনই তথাকথিত ছাত্র রাজনীতির বলি হয়ে ঢাবির ক্যাম্পাসে কোন এক মায়ের কোল খালি হয়, সন্তানহারা পিতার বুকফাটা আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাশ। তখনই চরম বাস্তব হয়ে ধরা দেয় পবিত্র কুরআনের সেই আয়াত- “তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করছোনা? অথচ দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুরা ফরিয়াদ করে বলছে- হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের কে জালিম অধ্যুষিত এই এলাকা থেকে বের করে নিয়ে যান, অথবা আমাদের জন্য কোন সাহায্যকারী বন্ধু পাঠাও”। আজকের সমাজ বাস্তবতাই যেন উক্ত আয়াতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আর বিবেকবান মানুষ মাত্রই স্বীকার করবে যে, ভঙ্গুর এ সমাজব্যবস্থার আমূল পরিবর্ত করে তদস্থলে আদর্শভিত্তিক, শরীয়া নির্ভর আধুনিক রাষ্ট্র কায়েম করা ছাড়া এর কোন বিকল্প হতে পারে না।

ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন সে পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২৫ বছরে চলার পথে আছে অনেক সফলতা, প্রাপ্তি ও অর্জন। আছে অপ্রাপ্তির গ্লাণিও। সব মিলিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী, চলমান অছাত্র নির্ভর ক্যাডারভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তনের মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন এদেশের সাধারণ ছাত্রদের মাঝে বেশ আস্থা অর্জন করতে পেরেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামকীন আমাদের কে রুহানিয়্যাত ও জিহাদের সুসমš^য়ের মাধ্যমে সম্মূখে এগিয়ে যাবার তাওফীক দান করুন। আমীন।