ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, দেশে যেভাবে খুন, গুম-অপহরণের ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে কোনো মানুষের নিরাপদে থাকার সুযোগ নেই। দেশের সর্বত্রই খুন-গুম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকার দেশবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। অথচ এই ভারত তিস্তার উজানে বাঁধ দিয়ে এককভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এর ফলে তিস্তা নদী আজ পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে এ অঞ্চলের হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা পানির অভাবে হাহাকার করছে। শুধু তিস্তা নদীই নয়, ভারত আরও ৫৪টি নদীর পানি প্রত্যাহার করে নিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করে চলেছে। তিনি অবিলম্বে তিস্তা চুক্তিসহ সকল অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে আরো বলেন, সরকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। একের পর এক মানুষ গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে। অথচ কোনটিরই কুলকিনারা করতে পারছে না। প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে অব্যাহত খুন-গুম এবং অপহরণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, দেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র বাস্তবায়ন হলে খুন, গুম-অপহরণ, ধর্ষণের মতো জঘন্যতম অপরাধ কমে যাবে। তিনি অবিলম্বে সংবিধানের মূলনীতিতে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃসংযোজনসহ দেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।

১৪ মে বুধবার বিকেলে রংপুরের মডার্ন মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রংপুর মহানগর শাখা কর্তৃক আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিস্তার পানিসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, দেশে অব্যাহত খুন, গুম এবং অপহরণ বন্ধ, সংবিধানের মূলনীতিতে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃসংযোজনসহ দেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত বিশাল সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি হযরত মাওঃ মোঃ খায়রুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মুঃ বরকত উল্লাহ লতিফ, জেলা সভাপতি হযতর মাওঃ মোসলেম উদ্দিন জিহাদী, জেলা সেক্রেটারি মুঃ মাহমুদুর রশিদ রিপন সরকার, জেলা সহ-সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়িতে ইউনিয়ন নেতা ও মাদরাসা শিক্ষক হাফেজ মুহাম্মদ কায়সার (২৮) এর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই। মুহাম্মদ কায়সার বৈলছড়ি শাখার সাবেক সভাপতি ও আল ফোরকান মাদরাসার র্অথ সম্পাদক ছিলেন। পীর সাহেব চরমোনাই এক বিবৃতিতে বলেন, ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে ঘটনার মূল রহস্য বের হবে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার না করলে দেশময় আন্দোলন সৃষ্টি হবে।