দেশ আজ চরম সংকটময় মুহুর্ত অতিক্রম করছে। একদিকে চলছে নাস্তিক-মুরতাদ ও ধর্মদ্রোহীদের উৎপাত। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল তাদেরকে আরও উৎসাহ দিচ্ছে। দেশময় চলছে চরম নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, দলীয়করণ, ঘুষ, দুর্নীতিসহ সকল অন্যায় কর্মকা-। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। মানুষের জান, মাল, ইজ্জত-আব্রুর কোন নিরাপত্তা নেই। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র বা সরকার মানুষের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু বর্তমান সরকারই নয়; স্বাধীনতার পর যারাই ক্ষমতায় এসেছে কেউ মানুষের অধিকার নিয়ে ভাবেনি। প্রত্যেকে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। কেউ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। মানুষের মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র¿, বাসস্থান এর সুষ্ঠু কোন ব্যবস্থা কেউ করেনি। দেশ স্বাধীন হয়ে চার দশকে পা দিল। এখনও মানুষ ডাস্টবিন থেকে কুঁড়িয়ে কুকুরের সাথে আহার করছে। খোলা আকাশের নিচে এখনও মানুষ রাত্রি যাপন করছে। এই সংকটময় অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। একটু মাথা গোঁজার আশ্রয় চায়। আর ইসলামই একমাত্র মানুষের মুক্তি, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। সমাজের সর্বস্তরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। আর এজন্যই ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা। আগামী দিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা তথা ইসলামী বিপ্লবের নেতৃত্ব দিবে এই ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার বিজয়নগরস্থ প্রো-এ্যাকটিভ হলে অনুষ্ঠিত ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের জেলা প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুহতারাম আমীর মুফতী সৈয়দ মুহা. রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই উপর্যুক্ত কথাগুলো বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মু. আরিফুল ইসলাম বলেন, আগামী দিনের জাতির নেতৃত্ব তৈরির কারখানা তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়েছে। জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রীর ওপর নগ্ন হামলা করেছে। এভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা আধিপত্ব বিস্তার করে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তিনি অবিলম্বে ছাত্রলীগের লাগাম টেনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সমস্যার সমাধানসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমস্যা চিহ্নিত করে তা নিরসনের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
জেলা প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির মাঝে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহা. আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির আলোচনায় তিনি বলেন, আজ মানবরচিত ও বস্তুবাদী মতবাদ এর অন্ধকারে গোটা রাষ্ট্র নিমজ্জিত। ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করে আলোকিত সমাজ গড়তে হবে। আর এ ক্ষেত্রে ছাত্র সমাজের ভূমিকা থাকবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ছাত্রদেরকে সুশৃংখল ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পূর্ণ আনুগত্যের সহিত কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এস.এম মাঈনুদ্দীন জাহাঙ্গীর, সাবেক ছাত্রনেতা মু. হুমায়ুন কবির, মু. আতিকুর রহমান। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি এইচ এম রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল কে এম আনিসুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মু. নূরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মু. নূরুন্নবী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম মারুফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মু. আবদুর রহমান গিলমান, অর্থ সম্পাদক মুসা বিন কাসিম, দফতর সম্পাদক বিলাল হোসাইন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় সাভারে নিহতদের মাগফিরাত ও আহতদের আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া করা হয়।